রবিবার

ঢাকা, ২৩ মার্চ ২০২৫

সর্বশেষ


খবর

জিপি বিচারিক ব্যবস্থায় শ্রদ্ধাশীল, কর্মীরা বলছেন, মামলা ঝুলিয়ে অধিকার হরণ করা হচ্ছে

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, দুপুর ৪:৩৮

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

তারা যে দাবিগুলো তুলেছেন সেগুলো বর্তমানে মহামান্য আদালতে বিচারাধীন। বিচারিক ব্যবস্থার প্রতি গ্রামীণফোন শ্রদ্ধাশীল। তাই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতেই এসব বিষয়ের নিষ্পত্তি হবে বলে বিশ্বাস করে গ্রামীণফোন।’

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কয়েক মাস ধরে নিয়মিত বিরোতিতে জিপি হাউজের সামনে বিক্ষোভের পর এবার পাওনা আদায়ে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলের তৃতীয় তলায় (পশ্চিম ব্লক) সংবাদ সম্মেলন করলো চাকরিচ্যুত ও অধিকারবঞ্চিতদের সংগঠন গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রামীণফোন লিমিটেড কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বৈষম্যের শিকার বর্তমান এবং সাবেক শ্রমিকদের আইনগত পাওনা ‘অংশগ্রহণ তহবিল’ ও ‘কল্যাণ তহবিল’-এর বিলম্ব জরিমানার টাকা পরিশোধ না করে পরিকল্পিতভাবে আইন লঙ্ঘন করে টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে চাকরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আবু সাদাত মো. শোয়েব চাকুরিচ্যুতির আদেশ বাতিল করে কর্মীদের ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বহাল, ২০০৯-২০১২ সালের ৫% লভ্যাংশের বিলম্ব বিতরণের প্যানাল্টি সহ সকল বকেয়া পরিশোধ, এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালানোর দায়ে জড়িত, গ্রামীণফোনের সিইও এবং সিএমওসহ তাদের সকল অনুসারী ম্যানেজার এবং চাটুকার ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, ২০১২ সালে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের চেষ্টা করায় প্রায় ১৮০ জন শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়। ২০১৫ সাল থেকে তথাকথিত স্বেচ্ছা অবসর স্কিম চালু করে শ্রমিকদের মানসিক চাপ ও হুমকি দিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ২০২১ সালে করোনা মহামারির সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ১৮০ জন শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়।

শোয়েব বলেন, শ্রমিকদের বঞ্চিত করার হীন উদ্দেশ্যে গত ১৫ বছর মামলা ঝুলিয়ে রেখে এবং আইনগতভাবে পাওনা টাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। নিজেদের আইন মান্যকারি প্রতিষ্ঠান দাবি করলেও সুকৌশলে ও সুক্ষ্মভাবে অপারেটরটি কর্মচারিদের অধিকার লুণ্ঠনে আইন ভঙ্গ করছে। শ্রমিকদের প্রতি দায়িত্বহীন আচরণ এবং শ্রম আইন লঙ্ঘেনের অভিযোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। গত এক দশকে প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা ৭০ শতাংশ কমে বর্তমানে ১২০০ জনে নেমে এসেছে। এই ছাঁটাই প্রক্রিয়ায় শ্রমিকদের জোর পূর্বক স্বেচ্ছা অবসরে বাধ্য করা, মানসিক চাপ দেওয়া এবং আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গ্রামীণফোন জানায়, “গ্রামীণফোনের কিছু সাবেক কর্মী চাকরি সংক্রান্ত নানাবিধ দাবি-দাওয়া নিয়ে গত কয়েক মাস যাবত জিপি হাউজের সামনে সমবেত হচ্ছেন। আমাদের জানা মতে, তাদের বেশিরভাগ বেশ কয়েক বছর আগেই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যান এবং আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য গ্রহণ করেন। এছাড়া তারা যে দাবিগুলো তুলেছেন সেগুলো বর্তমানে মহামান্য আদালতে বিচারাধীন। বিচারিক ব্যবস্থার প্রতি গ্রামীণফোন শ্রদ্ধাশীল। তাই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতেই এসব বিষয়ের নিষ্পত্তি হবে বলে বিশ্বাস করে গ্রামীণফোন।’’

গ্রামীণফোন আরও জানায়, ‘‘গ্রামীণফোন শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করে। তবে উক্ত ব্যক্তিরা জিপি প্রাঙ্গণের প্রবেশ ও বহির্গমনের পথ অবৈধভাবে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ সহ বেশ কয়েকবার অবরূদ্ধ করে। ফলে গ্রামীণফোনের কর্মী, সরবরাহকারী, ও গ্রাহকদের অবাধ চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে বাঁধাগ্রস্থ হয়। তারা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জিপি হাউজে আটকা পড়েন। এ পরিস্থিতিতে কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন। গ্রামীণফোন দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কর্মী ও গ্রাহকদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জিপি হাউস সংলগ্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নেয়। সম্প্রতি আমরা আরো লক্ষ্য করছি যে, এই ব্যক্তিরা গ্রামীণফোন সম্পর্কে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন।’’
 

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৮২ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর