রবিবার

ঢাকা, ১৫ জুন ২০২৫

সর্বশেষ


মুখোমুখি

আইএসপি খাতে শক্তিশালী পরিকল্পনা, সদস্য ও ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় নানামুখী উদ্যোগের কথা জানালেন আইএসপিএবি'র সাবেক সভাপতি

আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে: আমিনুল হাকিম

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, বিকাল ৭:৪৫

মুন এম. রাজীব

Card image

ছবি: মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম, সাবেক সভাপতি, আইএসপিএবি

আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।  এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক চ্যালেঞ্জ আসছে সামনে, সেগুলো মোকাবিলা করতে হবে।  টেলকো অপারেটরদের বিভিন্ন সেবা মার্কেটে এভেইলেবল হচ্ছে।  ফিক্সড ওয়্যারলেস, স্টারলিংক সেবা চালু হতে যাচ্ছে। ফলে সব আইএসপিকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। ছোট, বড় ও মাঝারি আইএসপিকে শক্তিশালী করতে হবে।  পেশীশক্তিধারী এবং যারা অবৈধ লাইসেন্সধারী তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। 

মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আইএসপিএবি'র সাবেক সভাপতি এবং আম্বার আইটি ‍লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। জনাব আমিনুল হাকিম এবার আইএসপিএবি নির্বাচনে (২০২৫-২৭ মেয়াদে) টিম আইএসপি ইউনাইটেড প্যানেল থেকে নেতৃত্বও দিচ্ছেন। সংগঠনের সদস্য এবং ভোক্তাদের কল্যাণে তিনি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মুন এম রাজীব

 

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: নির্বাচিত হলে আপনার প্রথম উদ্যোগ কী হবে?

আমিনুল হাকিম: আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। ঢাকা ছাড়া অন্য ৭টি বিভাগে অ্যাসোসিয়েশনের কোনও অফিস নেই। বিভাগীয় শহরগুলোতে অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অফিস স্থাপন করা হবে।

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: আইএসপিএবি নিয়ে আপনার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই।

আমিনুল হাকিম: আইএসপি খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য শক্তিশালী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: ইন্টারনেটের মানোন্নয়নে সরকারের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?

আমিনুল হাকিম: আইএসপি অ্যাসোসিয়েশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক চ্যালেঞ্জ আসছে সামনে, সেগুলো মোকাবিলা করতে হবে।  টেলকো অপারেটরদের বিভিন্ন সেবা মার্কেটে এভেইলেবল হচ্ছে।  ফিক্সড ওয়্যারলেস, স্টারলিংক সেবা চালু হতে যাচ্ছে। ফলে সব আইএসপিকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। ছোট, বড় ও মাঝারি আইএসপিকে শক্তিশালী করতে হবে।  পেশীশক্তিধারী এবং যারা অবৈধ লাইসেন্সধারী তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমাদের আরও ডিজিটাল সেবা চালু করতে হবে।  আইপি ফোন, আইপি টিভি চালু করতে হবে। আইএসপিদের ডিজিটাল সেবা দেশের বাইরে চালুর ব্যাপারে মনোনিবেশ করতে হবে।  ইন্টারনেটের মানোন্নয়নে ট্রান্সমিশন চার্জ কমিয়ে আনতে হবে।  অ্যাক্টিভ শেয়ারিং চালু করার মতো বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।  

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: ব্যান্ডউইথের দাম নিয়ে একটা প্রশ্ন আমরা সব সময় দেখে এসেছি। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য জানতে চাই।

আমিনুল হাকিম: আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম কম। অ্যাক্টিভ শেয়ারিং চালু করা গেলে দাম আরও কমবে।  এছাড়া ইন্টারনেট ইকো সিস্টেমে প্রতিটি লেয়ারে ভ্যাট, উচ্চকর, উচ্চ রেভিনিউ শেয়ারিং হার, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (এসওএফ) ইত্যাদি থাকার কারণে সরকারই ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ টাকা নিয়ে যায়।  ফলে এসবের হার না কমালে ব্যান্ডউইথের দাম কমিয়েও কোনও লাভ হবে না।

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: সদস্যদের স্বার্থ সংরক্ষণে আপনার ভূমিকা কী হবে?

আমিনুল হাকিম: আমরা নির্বাচিত হলে সদস্যদের জন্য একটি লিগ্যাল হেল্প ডেস্ক চালু করবো। এখানে আইনজীবী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকবেন। তারা সদস্যদের কোনও সহায়তার প্রয়োজন হলে সহায়তা দেবেন। একটা হটলাইন চালু করা হবে। সদস্যরা মোবাইল থেকে ফোন করেও সহযোগিতা নিতে পারবেন। সদস্যদের জন্য আগামী ৬ মাসে একটি ট্রেনিং সেন্টার চালু করা হবে। ছোট ও বড় আইএসপিদের জন্য হেল্প ডেস্ক খোলা হবে।

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে আপনাদের উদ্যোগ কী হবে?

আমিনুল হাকিম: ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কোয়ালিটি অব সার্ভিস মেইনটেইন করতে হবে। ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার, স্মার্ট টিকিটিং সিস্টেম, লাইভ চ্যাট, এবং অটোমেটেড সাপোর্ট টুল ব্যবহার করে তাদের সেবা দিতে হবে। আইএসপিদেরও নিজস্ব সিআরএম, এনএমএস, বিলিং সিস্টেম এবং রিয়েল টাইম অ্যালার্টিং প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে হবে।

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: বিগত সরকারের আমলে আইএসপিএবির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। বিশেষ করে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে। নতুন সরকারের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?

আমিনুল হাকিম: আইএসপির ভূমিকা তেমন ছিল না। কারণ, দেশে ব্যান্ডউইথ আসে দুটো মাধ্যমে। এক, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এবং দুই, আইটিসি অপারেটরদের মাধ্যমে। এই দুটো মাধ্যম সরকার বন্ধ করে দিলে দেশে আর ব্যান্ডউইথ আসবে না। ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাবে। ফ্যাসিস্ট সরকার নিজেই এটা করেছিল। তবে আমরা মনে করি, বর্তমান সরকারের এসব নিয়ে একটা সদিচ্ছা থাকতে হবে। ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে। ফলে সরকার আর এটাকে বন্ধ করতে পারবে না।

  • টেকওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ: আইএসপিএবি সংস্কারের একটা দাবি ছিল সদস্যদের পক্ষ থেকে। সে বিষয়ে আপনার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাই।

আমিনুল হাকিম: সদস্যদের অনেক সময় এরকম দাবি থাকে। বর্তমান কমিটি আগাম নির্বাচন দিয়ে দিয়েছে। নতুন যে কমিটি আসবে তারা সদস্যদের জন্য কাজ করবে। নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা করবে। বাংলাদেশ সরকার যে টপ লেভেলের টেলিকম পলিসি তৈরি করছে সেখানে টেলিকম পলিসি কিভাবে সংস্কার করা হবে সেসব নিয়ে আলোচনা করা হবে।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ১৯১০ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর