চালু হলো জাতীয় মোবাইল ব্রাউজার ‘তর্জনী’
প্রকাশ: ৭ মার্চ, ২০২৩, ০২:১৩
‘তর্জনী’ ব্রাউজারের সুবিধা হলো, এতে কোন ডাটা খরচ না করেই যেকোন ওয়েবসাইট ভিজিট করা যাবে। গুগল ক্রোম একটি দ্রুত এবং নিরাপদ ব্রাউজার, যা সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, তর্জনী ব্রাউজারটি তৈরি করা হয়েছে বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীদের ভাষাগত জটিলতা দূরীকরণের জন্য।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে দেশের সাধারণ জনগণকে সম্পূর্ণ বাংলায় সহজে ইন্টারনেট ব্যবহারে সহায়তা দিতে জাতীয় মোবাইল ব্রাউজার ‘তর্জনী’ প্রকাশ করলো আইসিটি বিভাগ।
ব্রাউজারটিতে শুধু বাংলা নয়, ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে ইংরেজি ভাষাও। অ্যাপল এবং গুগল প্লে-স্টোরে মিলবে নিরাপদ ও দ্রুতগতির এই বাংলাদেশি ব্রাউজার।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি সম্মেলন কেন্দ্রে ব্রাউজারটি উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এসময় তিনি বলেন, আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করছি। এই স্মার্ট বাংলাদেশের সুফল পেতে হলে আমাদের শুধু বিদেশনির্ভর সেবার ওপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। আমাদের স্বাবলম্বী হতে হবে। আমরা এমন একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ইকোসিস্টেম’ তৈরী করতে চাই, যেটি হবে স্বাবলম্বী। সেই স্বাবলম্বী স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য আমরা এনেছি ‘তর্জনী’।
‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ সাড়ে ৭কোটি মানুষকে বঙ্গবন্ধু যে তর্জনীর ইশারা দিয়েছিলেন, সেই তর্জনীর ইশারাতেই দেশের ব্যাংক-বীমা, অফিস আদালত সহ সবকিছু পরিচালিত হয়েছিলো। সেই তর্জনী দিয়েই মুক্তিযুদ্ধে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কীভাবে একটি সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সবকিছুর ইশরা তর্জনী দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই জন্য আমরা ওই তর্জনীর নামেই আমাদের নিজস্ব ব্রাউজারের নাম করণ করেছি’ -যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
গুগল ক্রোম এবং বাজারের অন্যান্য ব্রাউজারগুলোর মত তর্জনী ব্রাউজারেও সব ধরনের আধুনিক ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তর্জনী ব্রাউজার তুলনামূলকভাবে বাংলায় ব্যবহার করার জন্য অত্যন্ত সহজ এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি। এতে রয়েছে তর্জনী সার্চ বার, ডার্ক মোড, ট্যাব, বিজ্ঞাপন বন্ধ, বুকমার্ক, ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা, ইনকগনিটোর মতো নানা ফিচার।
পলক আরও বলেন, আমরা আত্মনির্ভরশীল একটা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে আমাদের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম থাকবে, নিজস্ব ব্রাউজারে ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করবে। আমরা চাই, আমরা শুধু ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং করবো না, আমাদের দেশ থেকেও গুগল, অ্যামাজন, ফেসবুক ও আলীবাবার মতো বিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি তৈরি ও উদ্ভাবনে তরুণদের সহযোগিতা করাই আমাদের আইসিটি বিভাগের মূল উদ্দেশ্য। সেই ক্ষেত্রে তর্জনী প্রকাশের মাধ্যমে আজ একটা বিশাল অগ্রগতি হলো। এখানে সরকারের বিভিন্ন সেবা, নিউজপোর্টাল ও বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টারের উদ্যোগে চালু করা ‘তর্জনী’ ব্রাউজারের সুবিধা হলো, এতে কোন ডাটা খরচ না করেই যেকোন ওয়েবসাইট ভিজিট করা যাবে। গুগল ক্রোম একটি দ্রুত এবং নিরাপদ ব্রাউজার, যা সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, তর্জনী ব্রাউজারটি তৈরি করা হয়েছে বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীদের ভাষাগত জটিলতা দূরীকরণের জন্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. বি এম মইনুল হোসেন একটি উপস্থাপনায় জানান, ব্রাউজারটির বৈশিষ্ট্য হলো, বাংলা ভাষা ডিফল্টভাবে সিলেক্ট করা থাকে এবং এর বাংলা অপটিমাইজেশন গুগল ক্রোম বা অন্যান্য ব্রাউজারগুলো থেকে তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী। পাশাপাশি ইংরেজি ভাষা সিলেক্ট করা যাবে।
তিনি বলেন, গুগল ক্রোম এবং বাজারের অন্যান্য ব্রাউজারগুলোর মত তর্জনী ব্রাউজারেও সব ধরনের আধুনিক ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তর্জনী ব্রাউজার তুলনামূলকভাবে বাংলায় ব্যবহার করার জন্য অত্যন্ত সহজ এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি। এতে রয়েছে তর্জনী সার্চ বার, ডার্ক মোড, ট্যাব, বিজ্ঞাপন বন্ধ, বুকমার্ক, ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা, ইনকগনিটোর মতো নানা ফিচার।
ব্রাউজারটির ডেভলাপার প্রতিষ্ঠান লাইভ টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, আমরাও ভার্চ্যুয়াল জগতে বাংলার ব্যবহারকে আরও সহজ ও জনপ্রিয় করতে তর্জনী নিয়ে এসেছি। এমন জাতীয় মোবাইল ব্রাউজার কেউ তৈরি করেনি। কিন্তু এবার থেকে ভার্চ্যুয়াল জগতে বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তর্জনী।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক সাইফুল আলম খান, লাইভ টেকনোলজিসের পরিচালক ইয়াসির আরাফাত।
সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৬৮ বার
সম্পর্কিত পোস্ট
মুখোমুখি

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ইকুইপমেন্টে ভ্যাট, ট্যাক্সের করবোঝা নামাতে হবে
সময়ের পালা-বদলে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল যুগ পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৬ সালের পর স্বল্পোন্নত আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।