স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ১ লাখ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে

প্রকাশ: ১৪ মার্চ, ২০২৩, ১১:২৫
Card image cap
ছবি:

২০১৪-১৬ সালে ১০টি ট্র্যাকে ৩৯৪ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পর ৩০৬ জনই চাকরি পেয়ে যায়। ১৪-১৮ সালে ১২ ট্র্যাকে ১০ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ৬ হাজার জনই কাজে যোগ দেয়। ১৯-২২ সালে ২২ ট্র্যাকে ৩ হাজার ৯৬ জন প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরিতে যোগ দেয় ২ হাজার ৬৭৫ জন। এবার হায়ার অ্যান্ড টেইন প্রোগ্রামের অধীনে ২০ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেয়ে হবে।

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিনিধি

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভবিষ্যতের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে শুরু হলো ‘হায়ার অ্যান্ড ট্রেইন’। এই ফাস্ট ট্র্যাক ফিউচার লিডার প্রোগ্রামে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, রোবটিকস, মাইক্রো অ্যান্ড ন্যানো চিপ ডিজাইনিং এবং সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে ১ লাখ মধ্যম সারির কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

সোমবার (১৩ মার্চ) রাতে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নেন্স অ্যান্ড ইকোনমি (EDGE) প্রকল্পের অধীন এই উদ্যোগটি উদ্বোধনকালে  এসব কথা বলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক বলেন, চাকরি দাতাদের কাছে হায়ার অ্যান্ড ফায়ার পরিচিত শব্দ হলেও চাকরিরতদের কাছে এটা খুব প্রিয় কাজ নয়। তাই এমন পরিস্থিতিতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা বা ব্রিজিং করাটাই সরকারে মূল কাজ। এক্ষেত্রে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় উপাত্তনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে গিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে একটা চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাকাডেমিয়ার মধ্যে সমন্বয় মারাত্মক ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা পরিবর্তনটা হচ্ছে ব্যাপক ও দ্রুত। এ কারণেই হায়ার অ্যান্ড ফায়ার থেকে রক্ষা পেতে এই হায়ার অ্যান্ড ট্রেইন প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আবারও জানান, খুব অল্পদিনের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আমরা এমআইটি-বুয়েট-আইসিটি একত্রিত হয়ে একটি ন্যানো চিপ প্রস্তুতের ল্যাব স্থাপন করতে যাচ্ছি। কেননা, বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিক বিনিয়োগ করার সুযোগ না পেলে বাংলাদেশ থেকে গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট গড়ে উঠবে না। তাই এবার ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের প্রথম নলেজ পার্ক করার কাজ শুরু হবে আগামী ১৮ মার্চ।

বক্তব্যের শেষ ভাগে এক গ্লাস পানির কিছুটা খেয়ে উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমি হাফ গ্লাস ফুল ও হাফ গ্লাস এম্পটি থিয়োরিতে বিশ্বাস করি না। আমি হাফ গ্লাস পানি ও হাফ গ্লাস বায়ুপূর্ণ আত্মবিশ্বাসে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চাই। তাই আমাদের প্রত্যেকটা হিউম্যান রিসোর্সকে আমরা এমনভাবে তৈরি করবো, কেউ বায়ু দ্বারা কেউবা পানি দিয়ে পূর্ণ হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংক ঢাকার জ্যেষ্ঠ পরিবহন বিশেষজ্ঞ রাজেশ রোহাতগি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার এবং আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে নেয়া এজ প্রকল্পটির ওপর আলোকপাত করেন স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ। 

তিনি জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশের মৌলিক কাজের মধ্যে অন্যতম ছিলো মানবসম্পদ উন্নয়ন। ২০১৪-১৬ সালে ১০টি ট্র্যাকে ৩৯৪ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পর ৩০৬ জনই চাকরি পেয়ে যায়। ১৪-১৮ সালে ১২ ট্র্যাকে ১০ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ৬ হাজার জনই কাজে যোগ দেয়। ১৯-২২ সালে ২২ ট্র্যাকে ৩ হাজার ৯৬ জন প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরিতে যোগ দেয় ২ হাজার ৬৭৫ জন। এবার হায়ার অ্যান্ড টেইন প্রোগ্রামের অধীনে ২০ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেয়ে হবে। এরই মধ্যে ১০ হাজার জনের চাহিদা পাওয়া গেছে। এই প্রশিক্ষতদের আগামী তিন বছরের মধ্যে এখানে উপস্থিত ১১০টি আইটি কোম্পানি নিয়োগ দেবে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের অনুমান তুলে ধরে তিনি বলেন, অটোমেশনের ফলে আগামী ১০ বছরে দেশে ইন্ডাস্ট্রি রোবটিকস কন্ট্রল, অটোমেটেড প্যাকেজিং, ক্যাড/ক্যাম অপারেটর ও থ্রিডি প্রিন্টার অপারেটরের মতো এক কোটি নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে।

উপস্থাপনা শেষে অনুষ্ঠিত প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাক্কো প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদ শরীফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি অনুষদের পরিচালক ড. মুহাম্মাদ শফিউল আলম খান, বিশ্বব্যাংকের ডিজিটাল উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ সুপর্ণা রায়, ঢাবি’র পিএমআইএস নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আক্রাম হোসাইন, আইসিটি বিভাগের এজ প্রকল্প পরিচালক ড. মুহাম্মদ মেহেদী হাসান, বুয়েটের গবেষণা ল্যাব আরআইইএস পরিচালক ড. মোহাম্মাদ আনিসুজ্জামান তালুকদার এবং বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হাসান বেনাউল ইসলাম। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যলয় থেকে স্নাতক পাস করে এলাইসিটি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অগমেটিক্সে এখন লিড ট্রেইনার হিসেবে কর্মরত আরিফা হায়দার তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ৭১ বার