২৫টি দেশের প্রকৌশলীদের ইন্টারনেটভিত্তিক জ্ঞান আদান-প্রদানে শেষ হলো সেনগ সম্মেলন

প্রকাশ: ১০ মে, ২০২৩, ০৪:২৩
Card image cap
ছবি: সংগৃহীত

সম্মেলন উপলক্ষে এবার বাংলাদেশ থেকে ৪জনসহ বিশ্বের ৪টি দেশের মোট ১১ জনকে ফেলোশিপ দেয়া হয়েছে। সম্মেলনে উত্থাপিত হয়েছে বেশ কিছু গবেষণাপত্র। শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য ৮টি দেশ থেকে এসেছেন বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক দল।

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিনিধি

ইন্টারনেটের প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক তৈরিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নিয়মিত সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি করে আসছে ইন্টারনেট প্রকৌশলীদের সংগঠন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অপারেটর্স গ্রুপ (সেনগ)। এশিয়া মহাদেশের ইন্টারনেট প্রকৌশলীদের সাথে বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের ইন্টারনেটভিত্তিক প্রযুক্তিগত জ্ঞান আদান-প্রদান ও বৈশ্বিক টেকসই নেটওয়ার্ক তৈরিতে একে অপরকে সহযোগিতা করতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো সেনগ-এর ৩৯তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন।

মঙ্গলবার (৯ মে)  রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় স্যানগ-এর ৩৯তম আসর। ষষ্ঠবারের মতো  অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ (বিডিনগ)।

সম্মেলনে ভারত, ভুটান, শ্রীলংকা, নেপাল, পাকিস্থান, হংকং, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, জার্মানী, নেদারল্যান্ড ও স্যানগ সদস্যভুক্ত দেশসহ ২৫টি দেশের ইন্টারনেট পেশাজীবী  সংগঠনের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, নেওয়ার্ক প্রোফেশনালস, সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ গ্রহণ করেন। 

প্রযুক্তির এই মিলনমেলায় সংযুক্ত হয়েছে গুগল, আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস (এডব্লিউএস), ইন্টারনেট সোসাইটি, সিসকো এবং এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার (এপনিক) এর মতো ইন্টারনেটের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।

প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি অতীতের এনালগ বাংলাদেশ থেকে কিভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হলো, তার  ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের কম্পিউটার পরিচিতির ফেলে আসা সেইসব দিনগুলো অকপটে স্মরণ করেন, ইংরেজি হরফ থেকে বাংলা হরফে কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ রূপান্তরের তথ্য উপাত্ত বর্ণনা করেন। 

ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ম্যাজিক্যাল সুবিধার উপরে আলোকপাত করতে গিয়ে ইন্টারনেটকে প্রযুক্তির প্রাণ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এই তথ্যপ্রযুক্তিবিদ। তিনি চলমান সম্মেলন আইডিয়া নিয়ে, এর থেকে কিভাবে লাভবান হওয়া যায় তার জন্য বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেয়ার উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন। অদূর ভবিষ্যতে গুণগত ইন্টারনেট সেবা পাওয়ার লক্ষ্যে কিভাবে নেটওয়ার্ক কাঠামো উন্নত করা যায় সে ব্যাপারে জ্ঞান অর্জনের জন্য আহ্বান জানান মন্ত্রী। 

ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অপরিহার্য উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন,  ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অপরিহার্য। এ বিষয়েও আমরা অত্যজন্ত মনোযোগী। এ জন্য একই সঙ্গে আইপিভি ৪ ও আইপিভি ৬ অ্যানাবল রাউটার আমদানিতে বাধ্যাবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য৪ আইপিভি ৬ বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। 

মন্ত্রী জানান, দেশব্যাপী ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত ১৪ বছরে আমরা শুধু ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কই তৈরি করিনি, ইন্টারনেটের প্রতি এমবিপিএসের মূল্য ২৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ টাকায় নামিয়ে এনেছি। 

তিনি বলেন, এক দেশ এক রেট নির্ধারণের মাধ্যুমে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা হয়েছে। ইন্টারনেট এখন মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের মতো। ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার হতো সাড়ে সাত জিবিপিএস, তা বর্তমানে ৪১শ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। সে সময়ের ৮ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর স্থলে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ কোটি।

ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাসড়ক নির্মাণে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা, ডাটা নিরাপত্তা; ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদুর প্রসারী ভিশন ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে প্রথাগত সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর হচ্ছে। এবারের ঈদে ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। ভূমি ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রূপান্তর হয়েছে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমেই এসব রূপান্তর সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে জীবনের রসদ।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছর পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ বিশ্বে আজ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের প্রতিটি মানুষের দোড়গোড়ায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে এমন কোনো ইউনিয়ন থাকবে না যেখানে দ্রুততগতির ইন্টারনেট সুবিধা থাকবে না। আমরা দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ অঞ্চলে মোবাইল ফোনের জন্যর ফোরজি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। ২০২১ সালে আমরা ৫জি প্রযুক্তি চালু করেছি। 

ডিজিটাল বাংলাদেশের উপকারিতা সম্বন্ধে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রথাগত সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তরিত হচ্ছে। এবারের ঈদে ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। ভূমি ব্যাবস্থার পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রূপান্তর হয়েছে। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই এই রূপন্তর সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারনেট হয়ে উঠেছে জীবনের রসদ। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য নেটওয়ার্কের নিরাপত্তাতেও আমাদের মনোযোগী হতে হবে। এছাড়া আমাদের নেটওয়ার্ক প্রকৌশলীদেরও আরো বেশি দক্ষতা উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এই সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বাস্তবে প্রতিফলিত করার জন্য তাগিদ দেন এই তথ্যপ্রযুক্তিবিদ। তিনি এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব তুলে ধরে, এর থেকে বাংলাদেশ কিভাবে লাভবান হবে সে ব্যাপারে আয়োজক সংস্থা আইএসপিএবি ও বিডিনগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এ আয়োজনের সাফল্য কামনা করে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। 

আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য দেন আইএসপিএবি'র সভাপতি মো. ইমদাদুল হক। বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী ও নিরাপদ ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক কাঠামোর উন্নয়ন ও প্রসারে সেনগ ৩৯  একটি তথ্যবহুল সম্মেলন, যেখানে কয়েকটি স্তরে দেশ ও বিদেশের প্রশিক্ষণার্থীরা বিষয়-ভিত্তিক অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি টেকসই ইন্টারনেট সিস্টেম গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। 

আইএসপিএবি'র সভাপতি বলেন, আইপিভি-৬, সাইবার সিকিউরিটি ও অটোমেশনের উপরে বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ারদের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কিভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করা যায়, সেই সম্বন্ধে পরিষ্কার ধারণা পাবে। সেই সাথে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে ২০৪১ মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।  

অ্যাপনিকে মহাব্যবস্থাপক পল উইলসন বলেন, বাংলাদেশ ইন্টারনেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরিতে বরাবরই ভীষণ সক্রিয় ও দক্ষ। তিনি ইন্টারনেট সেক্টরে মেয়েদের এগিয়ে আসার উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন এবং দক্ষ প্রশিক্ষকদের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। 

স্যানগ সভাপতি রুপেশ শ্রেষ্ঠ ও  বিডিনগ সভাপতি রাশেদ আমিন বিদ্যুৎ তাঁরা দুজনেই প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও অংশগ্রহণকারীসহ অনুষ্ঠান আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম। তিনি ইন্টারনেট অব থিংস, সাইবার সিকিউরিটি এবং মেশিন লার্নিংয়ের উপরে আলোকপাত করেন। তিনি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কোলাবরেটর্স, নেটওয়ার্ক অপারেটর্স ও স্পন্সরদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি  সহজে বাংলাদেশে ডিজিটাল ডিভাইস এবং যন্ত্রপাতি আমদানির সহজিকরণ ও যুগোপযোগী করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এই সম্মেলনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণের আয়োজন করার জন্য আইএসপি এবং বিডিনগকে  ধন্যবাদ জানান। 

বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শ্যাম সুন্দর সিকদার।এ ধরনের একটি সম্মেলন আয়োজন করার জন্য আইএসপিএবিকে তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি ফেলোশিপ দেয়ার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের উৎসাহিত করার জন্য স্যানক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। তাছাড়া আইপিভি৬ সাইবার সাইবার সিকিউরিটি এবং অটোমেশনের উপরে ট্রেনিং জোরদার করার কথা বলেন। 

ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ রূপান্তরের জন্য দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান। তিনি দেশে-বিদেশের এক্সপার্টদেরকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি এই অনুষ্ঠানকে একটা মেগা ইভেন্ট হিসাবে গণ্য করে এ থেকে জ্ঞান আহরণ এবং অভিজ্ঞতা ব্যবহার করার জন্য সকলকে অনুরোধ জানান। 

আইবিপিসির সমন্বয়ক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান বিশেষ অতিথিসহ সবাই তাঁদের বক্তব্যে কিভাবে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হলো এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের জন্য এই কনফারেন্সের গুরুত্ব তুলে ধরে নেটওয়ার্ক ইনফ্রাস্ট্রাকচার আইপিভি৬, নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা এবং অটোমেশনের উপরে এই কনফারেন্স থেকে শিক্ষা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিশিয়ানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 

সেই শিক্ষা থেকে কিভাবে বাংলাদেশকে সাইবার আক্রমণ মুক্ত করে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রস্তুতি নেয়া যায় এর জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করেন।এই সম্মেলন থেকে সিকিউরিটি আপডেট করে কিভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেই পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইএসপিএবি'কে অ্যাপ্রসিয়েট করেন। 

এরপর বিডিনগ, স্যানগ তাদের সংগঠন, কার্যকলাপ ও চ্যালেঞ্জের উপর আপডেট প্রদানের মধ্য দিয়ে উপস্থিত বিশেষজ্ঞ টিম এবং স্পন্সরদের মধ্যে ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়।

সম্মেলন উপলক্ষে এবার বাংলাদেশ থেকে ৪জনসহ বিশ্বের ৪টি দেশের মোট ১১ জনকে ফেলোশিপ দেয়া হয়েছে। সম্মেলনে উত্থাপিত হয়েছে বেশ কিছু গবেষণাপত্র। শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য ৮টি দেশ থেকে এসেছেন বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক দল।

এপনিকের ইন্টারনেট রিসোর্স অ্যানালিস্ট শোভা শামারুখের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনা ছাড়াও জোবায়ের খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে দুইটি টেকনিক্যাল সেশন পরিচালনা করেন অনুরাগ ভাটিয়া, হাসানুজ্জামান আশিক, আবু সুফিয়ান। ড. ফিলিপ স্মিথের সভাপতিত্বে রাহুল মাখিজা ও ইসমত জেরিন অন্য আর একটি টেকনিক্যাল সেশন পরিচালনা করেন।  

সম্মেলনের শেষ অংশের প্যানেল ডিসকাসনে অংশ নেন বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিরা এবং তারা সবাই এই সম্মেলনকে একটা সার্থক সম্মেলন হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সম্মেলন থেকে অনেক কিছু শেখা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। বাংলাদেশের ইন্টারনেট কমিউনিকেশনের চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করার মাধ্য দিয়ে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় ও সমাধানের পথ খুঁজে বের করা হয়। 

তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় (১) নেটওয়ার্ক স্ট্রাকচার কষ্ট (২) আইপিভি-৪ থেকে আইপিভি৬-এ রূপান্তরে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ভূমিকা এবং (৩) সরকারের সদিচ্ছাকে আহ্বান জানান। ক্রস বর্ডার ইন্টার কানেক্টিভিটি নিয়েও আলোচনা করা হয়। ইনফ্রাস্টকচারে ক্যাবল  ড্রেসিং এর  দুর্বলতা নিয়েও আলোচনা হয়। নেটওয়ার্ক শেয়ারিং কার্যকর করার মাধ্যমে লাস্ট মাইল কানেক্টিভিটি বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। 

সবশেষে রাউটিং অপারেশন ভেলিডেশন নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে স্যানগ সভাপতি ও আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদকের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে সবার সার্বিক কার্যক্রম সমাপ্ত করা হয়।  

উল্লেখ্য, ১০-১৩ মে পর্যন্ত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকায় প্রতিদিন তিনটি করে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। কর্মশালাগুলো হবে  বিজিপি ও আইপিভি-৬ ডেপ্লয়মেন্ট, নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা এবং নেটওয়ার্ক অটোমেশনের উপর। এতে নিবন্ধিত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৫০ জন প্রকৌশলী অংশ নেবেন।  

প্রশিক্ষক হিসেবে থাকছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ টেরি স্যুইটসার  (এপনিক), আব্দুল্লাহ আল নাসের,  (এপনিক), মো. জোবায়ের খান, (এপনিক), ওয়ারেন ফিঞ্চ (এপনিক), শামীম রেজা, (এপনিক), সুমন কুমার সাহা, (এডিএন টেলিকম), অনুরাগ ভাটিয়া, (হ্যারিকেন ইলেকট্রিক), রুপেশ ব্যাসনেট (ওঁ নেটওর্য়াক) এবং শায়লা শারমিন (প্রাইম ব্যাংক)।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ১৩০ বার

সম্পর্কিত পোস্ট