বাংলাদেশের স্টার্টআপদের জন্য যুক্তরাজ্যের বাজার আকর্ষনীয় এবং সম্ভাবনাময়

প্রকাশ: ০৪:৩১ মিঃ, জুন ৭, ২০২০
Card image cap
ছবি:

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিনিধি

অন্যান্য যেকোন সময়ের মত বর্তমানেও  পন্য রফাতানী বানিজ্য প্রসারের বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্য  আকর্ষনীয় এবং সম্ভাবনাময় । বিশেষ করে যারা দেশে স্টার্টআপ হিসাবে কাজ করছে জানিয়ে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশী হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন-  রফতানী বানিজ্যে বাংলাদেরশর জন্য দ্বীতৃয় বৃহত্তর দেশ হলো যুক্তরাজ্য । গত বছরে এই বাজার ছিল ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বৎসর জুন পর্যন্ত এই বাজারের পরিমান দাঁড়িয়েছে ২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। অর্থাৎ এবছরের বাজারে কোভিড-১৯ প্রভাব না ফেললেও এখন যে অর্ডারগুলো আসার কথা ছিল সেগুলো না আসার কারনে আগামী দিন গুলোতে এর প্রভাব পড়বে ।  তাই  র্গামেন্টস শিল্প ছাড়াও ফার্মাসিটিক্যালস, পাট শিল্প, এবং তথ্যপ্রযুক্তি সেবাপন্যের রফতানীর প্রতি আমাদের মনোযোগী হতে হবে বলে জানান তিনি।

 গতকাল অনলাইনে আয়োজিত ”আন্তজাতিক বানিজ্য সম্প্রসারন “ শীর্ষক এক ওয়েবনিয়ার আলোচনায় সন্মানিত অতিথি হিসাবে এসব কথা বলেন তিনি। 

বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির সহায়তায় স্কুপার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই ওয়েবনিয়ারে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম। আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রোহাল চার্টাট সার্টিফাইড একাউন্টসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রদিপ্তা প্যাটেল এবং হালিমা সেলিম, এল এস লিগ্যাল সলিসিটরস এর প্রিন্সিপ্যাল সলিসিটর এবং ম্যানেজিং পার্টনার মিজ লিলিয়া স্কট,  ওযাটফোর্ড এন্ড ওয়েস্ট হার্টস চেম্বার অফ কর্মাসের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিশ লুফ এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির প্রকল্প পরিচালক এএনএম শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বক্তারা যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ রফতানী বানিজ্যের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা এবং  সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা করেন।

অনূষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন সিল্কোয়াক গ্লোবাল লিমিটেডের সভাপতি এবং প্রধান নির্বাহী পরিচালক সৈাম্য বাসু। 

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন স্কুপার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মো: শুশান।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন-আমাদের দেশের তরুন উদ্যোক্তা এবং স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো করছে। আমরা চাই তারা এগিয়ে যাক। রফতানী বাজার হিসাবে যুক্তরাজ্য বরাবরই আমাদের জন্য আর্কষনীয়। বর্তমান সময়ের এই সুযোগটা আমাদের স্টার্টআপদের কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা আমাদের তরুন উদ্যোক্তাদের যুক্তরাজ্যর বাজারে প্রবেশে আমরা যুক্তরাজ্য চেম্বার অব কমার্স এবং বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য হাই কমিশন এর সহায়তা পাবো আশা করছি। 

যুক্তরাজ্যের বাজার রফতানীর জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ প্রদিপ্তা প্যাটল এবং হালিমা সেলিম বলেন- যুক্তরাজ্যের বাজার সম্পূর্নরুপে ব্যাবসা বান্ধব। আকর্ষনীয় ব্যাবসায়িক পরিবেশ, উন্নত অবকাঠামো এবং সরকারী সুযোগ সুবিধায় অন্য যেকোন দেশের তুলনায় যুক্তরাজ্য এগিয়ে সেসাথে বাজারের আয়তন ও বেশ বড়। বাংলাদেশের যেকোন ব্যাসসায়িদের যুক্তরাজ্য বাজারে প্রবেশের জন্য আমরা ইতিবাচক পরামর্শ দেবো সে সাথে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।

বক্তব্যে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সকল ধরনের ভিসা সুবিধার বিশদ বর্ননা দেন লিলিয়া স্কট ।

স্টার্টআপদের জন্য সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ করে ওযাটফোর্ড এন্ড ওয়েস্ট হার্টস চেম্বার অফ কর্মাসের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিশ লুফ বলেন- যেকোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্ভাবন সহ স্টার্টআপস গুরুত্বপূর্ন। এদেরকে উৎসায়িত করতে আমরা আলাদা করে স্টার্টআপ ইনোভেশন সেন্টার করেছি । আমরা মাসে একদিন তাদের সাথে মিটিং করি এবং পারস্পারিক আলোচনায় বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাহায্য করি। অনলাইনে বাংলাদেশ থেকেও কেউ চাইলে এইসব মিটিং এ যোগদান করতে পারে।

আলোচক হিসাবে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির প্রকল্প পরিচালক এএনএম শফিকুল ইসলাম বলেন- গত কয়েক বছরে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রবৃদ্বির হার প্রশংসনীয় যা কোভিড-১৯ এর প্রভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের দেশের রফতানী বানিজ্যের সিংহভাগই র্গামেন্টস ‍শিল্প হলেও অন্যান্য খাতও এগিয়ে গেছ বহুদুর।বর্তমানে বাংলাদেশ হতে  বিশ্বের ১৪৭টি দেশে রফতানী হচ্ছে ঔষধ। এছাড়াও রফতানী হচ্ছে দেশীয় সফটওয়্যার সহ হার্ডওয়্যার পন্যসেবা। দেশেই তৈরী হচ্ছে হার্ডওয়্যার পন্য। কোভিড-১৯ এ সারাবিশ্বের সাপ্লাই চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিরুপ প্রভাব পড়েছে আর্ন্তজাতিক বানিজ্যে । রফতানী বন্ধ হয়ে গেছে অনেক দেশের সাথে অনেক দেশের ।বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। 

ওমেন এন্ড ই-কর্মাস প্লার্টফর্ম এর সভাপতি নাসিমা নিশা বলেন – আমাদের দেশের নারীরা ই-কর্মাস ব্যাবসায় বেশ ভালো করছে। দেশীয় পন্য নিয়ে কাজ করছে ওমেন এন্ড ই-কর্মাস প্রায় দেড় লক্ষ সদস্য যার সিংহভাগই নারী। সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা পেলে তারা অবশ্যই যুক্তরাজ্য সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে পন্য রফতানীতে সফল হতে পারবে।

বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটির সহায়তায় স্কুপার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই ওয়েবনিয়ারে সারা দেশ হতে প্রায় তিন শতাধিক উদ্যোক্তা অংশগ্রহন করেন। আগামীতে দেশের উদ্যোক্তাদের সহায়তায় এধরেনের আরো অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ১৪৪৩ বার