বুধবার

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ


সফটওয়্যার

গণপরিবহনে নারীদের সুরক্ষায় সহায়তা করবে হেল্প অ্যাপ

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, দুপুর ১১:৩৪

টেকওয়ার্ল্ড প্রতিবেদক

Card image

ছবি: সংগৃহীত

‘হেল্প’ প্রকল্পের আওতায় মোহাম্মদপুর থেকে সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী বাসে কিউআর কোড বসানো হবে, যাতে নারীরা দ্রুত সহায়তা নিতে পারেন। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হবে, যারা ইমার্জেন্সি সেবার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন। একে কার্যকর করতে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।

রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চালু হয়েছে সেবাভিত্তিক অ্যাপ ‘হেল্প’। এই অ্যাপের মাধ্যমে চলন্ত বাস বা যেকোনো গণপরিবহনে নারীরা তাদের সঙ্গে ঘটা যেকোনো হয়রানি বা যৌন নিপীড়নের ঘটনার জন্য তৎক্ষণাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চাইতে পারবেন। জানাতে পারবেন অভিযোগও।

অ্যাপটির পুরো নাম হ্যারাসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম (হেল্প)। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই পরিষেবাটি চালু করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড ও আর্টিকেল নাইনটিনের সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে ডেইলি স্টার ভবনে অ্যাপটির উদ্বোধন করা হয়। বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরুতে এই সেবা ঢাকার বছিলা থেকে সায়েদাবাদ রুটে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে সীমিত আকারে সেবাটি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে নিতে পারবেন নারীরা।

‘হেল্প’ প্রকল্পের আওতায় মোহাম্মদপুর থেকে সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী বাসে কিউআর কোড বসানো হবে, যাতে নারীরা দ্রুত সহায়তা নিতে পারেন। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হবে, যারা ইমার্জেন্সি সেবার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন। একে কার্যকর করতে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।

অ্যাপে রিপোর্ট করলে তা ভলান্টিয়ারদের কাছে তথ্য পৌঁছে যাবে। ভুক্তভোগী কাছের থানার ডিউটি অফিসারের কাছে সরাসরি কল করতে পারবেন।

এছাড়া জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯ এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে অ্যাপটি। অ্যাপের মাধ্যমে রিপোর্টগুলো সংরক্ষণ করা হবে, যা পরে আইনি সহায়তার জন্য কাজে লাগবে। নিজের পরিচয় গোপন রেখেও এ অ্যাপে রিপোর্ট করার সুযোগ থাকবে।

অ্যাপটিতে ‘অ্যালার্ট’ অপশন থাকবে, যা চাপ দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ভলান্টিয়ারদের কাছে ভুক্তভোগীর ‘রিয়েল টাইম লোকেশন’ পৌঁছে যাবে।

অ্যাপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মাগুরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নারীরা যে হয়রানির শিকার হয়েছেন, তা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। এসব ঘটনা যতটুকু মিডিয়ায় আসে, বাস্তবে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ঘটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সামাজিক ও পারিবারিক কারণে বিষয়গুলো সামনে আনতে চান না। গৃহকর্মীদের ওপরও নানা ধরনের নির্যাতন চলে, কিন্তু ৯৫ শতাংশ ঘটনাই সামনে আসে না।

অ্যাপের বিষয় ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ অ্যাপ যদি থানায় রিপোর্ট পাঠাতে পারে, তবে তা ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (এফআইআর) হিসেবে গণ্য হতে পারে। পুলিশ চাইলে বাদী হয়ে মামলা করতে পারবে এবং তদন্ত শুরু করতে পারবে। এ অ্যাপকে কার্যকর করতে প্রয়োজনে ডিএমপি সহযোগিতা করবে।

বিশেষ অতিথি মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, সাম্প্রতিক নারী নির্যাতনের যে খবর আসছে, বাস্তবচিত্র আরও খারাপ। একজন নারী ধর্ষণের শিকার হলে তিনি একা নন, পুরো সমাজ-রাষ্ট্রও ধর্ষিত হয়। সে জন্য এটি প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। লিঙ্গবৈষম্য ও নারীর প্রতি হয়রানির ঘটনাগুলো তুলে ধরা এবং সচেতনতা সৃষ্টি করা জরুরি। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কমিউনিটি পর্যায় থেকে চাহিদা আসতে হবে। অধিকার কর্মীদের পাশাপাশি সাংবাদিকরাও এ কাজটি করছেন, যা প্রশংসনীয়।

সভাপতির বক্তব্যে বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিজেসি ভবিষ্যতেও কাজ করবে বলে জানিয়েছেন।

পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরুতে এই সেবা ঢাকার বছিলা থেকে সায়েদাবাদ রুটে বাস্তবায়ন করা হবে। যদিও সীমিত আকারে সেবাটি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে নিতে পারবেন নারীরা।
 

সংবাদটি পঠিত হয়েছে: ১৩৩ বার

এ সম্পর্কিত আরও খবর